Sharing is caring!
বিশেষ প্রতিবেদন: সিলেট এসএমপি কমিশনার নিশারুল আরিফ ও দক্ষিণ জোনের ডিসি সোহেল রেজা দুজন স্বজন ব্যক্তি হিসাবে এসএমপিতে বেশ পরিচিত। কিন্তু সেই এসএমপি কমিশনার আর সোহেল রেজাকে পাত্তাই দিচ্ছেনা সিলেটের জুয়াড়ীরা। যদি এসএমপি পুলিশ কমিশনার ও ডিসির নির্দেশে মাঝে মধ্যে অভিযানে নামে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। কিন্তু অভিযানের আগেই অপরাধীদের অভিযানের খবর জানিয়ে দেওয়া এটা এখন তাদের অধিনস্ত পুলিশ সদস্যদের স্বভাবযাত অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ সুরমার কদমতলী ফেরিঘাটের কুখ্যাত জুয়াড়ী হারুনের চায়না কলোনী, হেলাল মিয়ার কলোনী ও মেম্বারের কলোনীতে দক্ষিণ সুরমা ফাঁড়ি পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জুয়াড়ীকে আটক পুলিশ । কিন্তু জুয়ার আসরের মেইন মালিক হারুনকে পেয়েও ছেড়ে আসার অভিযোগ উঠেছে অভিযানকারি দলের বিরুদ্ধে। আটককৃত ৪ জুয়াড়ীকে পুলিশ আদালতে চালানের পূর্বেই হারুনের নেতৃত্বে নতুন করে শুরু হয়ে যায় জুয়া খেলা। এক সময় হারুন একা এসব জুয়ার বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করলে এখন তার বেশ কয়েকজন সহযোগী রয়েছে।
জনশ্রুতি মতে, হারুন নাকি প্রায়ই বলে বেড়ায় এসএমপি ডিবির এক বড়কর্তা হাত রয়েছে হারুনের মাথার ছায়া হিসাবে। তবে হারুনের মতো একজন জগন্য লোকের মাথার উপর ডিবি কর্মকর্তার হাতের বিনিময় দিতে ভুল করেনা হারুন। বন্দরের লাল বাজার কিংবা কাজির বাজার থেকে সেই অফিসারের বাসায় প্রতি সপ্তাহে, বিলের তাজা মাছ আর দেশী মোরগসহ বেশ বাজার সদাই নিয়ে যায় হারুন। ফলে জুনিয়র অফিসারগণ হারুনের ধারে কাছেও যেতে পারেনা। সেখানে থানা বা ফাঁড়ি পুলিশের কি বা করার আছে।
এই হারুন নাকি প্রায়ই বলে থাকে, এসএমপির জনৈক ঐ বড়কর্তার সাথে তার বেশ সম্পর্কের কথা, তাকে নিয়ে তিনি মাঝে মধ্যে সলাপরামর্শ ও করেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ডিবির একটি গোপন সূত্র জানায়, এই হারুনকে আটক করতে একবার ডিবি অভিযান চালায়। সে সময় সেই অভিযানকারি দলকে হারুনকে গ্রেফতার না করতে সেই অফিসার নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন।
সম্প্রতি দক্ষিণ সুরমা থানার অভিযানকালে ৪ জুয়াড়িকে আটক করলেও জুয়ার আসরগুলোর মালিক হারুনকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। অভিযানের আগেই নাকি হারুন সেখান থেকে সটকে পড়ে। আটককৃতরা ছিলেন কদমতলী ফেরিঘাটের বদরুল মিয়ার ছেলে হিরন মিয়া (২৮), একই এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে মাহবুব আলম (২৯), সামসুদ্দিনের ছেলে জসিম মিয়া (২৮) ও ভার্তখলার আব্দুস সাত্তারের ছেলে মিন্ঠু হোসেন (২৯)। সোমবার দুপুরে জুয়া আইনের ৯৫ ধারা মোতাবেক তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালত তেকে তারা পরদিনই জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়।
জনশ্রুতি ও তথ্যমতে, এরকম অর্ধশতাধিক জুয়ার আসর রয়েছে দক্ষিণ সুরমা থানা ও ফাঁড়ি এলাকায়। যদিও এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান প্রায়ই বলেন,‘ জুয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে।আর ডিসিতো প্রতিনিয়ত নির্দেশ দিচ্ছেন জুয়ার আসর বন্ধের জন্য, কিন্তু কে শুনে কার কথা। ডিসি বলছেন, ওসি শুনছেন, অধিনস্তরা অভিযানের বদলে শেল্টার দিয়ে নিজের পকেট ভারি করছেন।
হারুনের জুয়া আসরের পাশাপাশি দক্ষিণ সুরমায় বালুর মাঠে রয়েছে দক্ষিণ সুরমার সবচেয়ে বড় জুয়ার বোর্ড যে টি ফাঁড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরত্বে অবস্তিত, এটি পরিচালনা করেন, নজরুল, মানিক, রতন, আজমল, ও বাছন। এভাবে পুরাতন রেলষ্টেশনে রয়েছে নজরুলের একটি জুয়ার বোর্ড, আল আমিনের আরেকটি জুয়ার বোর্ড, বাবুলের আরেকটি জুয়ার বোর্ড। এছাড়া নতুন রেলষ্টেশনের ভিতরেই রয়েছে নান্টুর বিশাল বড় জুয়ার বোর্ড। যেনো এগুলো দেখার কেই নেই।পুলিশ দেখেও না দেখার বান করে নিজেরদের টু-পাইস, কামিয়ে নিচ্ছে।
আগামীকাল পড়ুন লালাবাজারের গিয়াস চেয়ারম্যানের অপ্রতিরোধ্য জুয়ার বোর্ড এখন কিনব্রিজের নিচে। পাশাপাশি উত্তর সুরমার একাধিক জুয়ার আসর ও মালিকদের জুয়ার বোর্ড নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন। এসব জুয়ার আসর থেকে প্রশাসনের কোন ইউনিট কে, কত টাকা পান, এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন।
৬৮১ পড়েছেন