Sharing is caring!
সিলেট এইজ ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ দল হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। তারা এখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পুলিশ, আমলাদের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে চার ঘণ্টার গণঅবস্থান কর্মসূচি শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে বিএনপিসহ ৫৩ সমমনা রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। এরই অংশ হিসেবে দশ দফা দাবিতে নয়াপল্টনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। সেখান থেকে ১৬ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার অন্যায়ভাবে গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। জনগণ আর পারছে না। সারা দেশের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌর সদরে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালন করা হবে। এদিকে গণঅবস্থানকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কাকরাইল ও ফকিরাপুল মোড়ে জলকামানের গাড়ি দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণ জেগে ওঠেছে। জনগণ এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের কাছ থেকে মুক্তি চায়। দুইবার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে এ সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবীরা এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন হতে হবে। সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটি করতে দেওয়া হবে না।’‘সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘লুটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এক ঢাকা ওয়াসার এমডির যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি, যার একটির দামই ৫০০ কোটি টাকার বেশি। হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। তারা শত হাজার কোটি পাচার করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ‘১৫ জন নিহত হয়েছেন’ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে শত শত কর্মী আহত হয়েছেন। বহু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের ছয় শতাধিক কর্মীকে অমানবিকভাবে রাখা হয়েছে।’গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দুদিন আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগে সফল সমাবেশ হয়েছে। যারা কারাগারে রয়েছেন, তারা দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করছেন।’বিএনপির এ কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাড়াও অংশ নেন- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর মহানগরসহ ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক জেলার বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। এছাড়া সংহতি জানিয়ে অংশ নেয়- সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইউট্যাবসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনও।ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, আফরোজা খানম রীতা, রকিবুল ইসলাম বকুল, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, মীর নেওয়াজ আলী, সাইফুল আলম নিরব, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, মহানগর বিএনপির নবী উল্লাহ নবী, যুবদলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজিব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গনি চৌধুরী, জিয়া পরিষদের আব্দুল কুদ্দুস, ড্যাবের আবদুস সালাম, অ্যাবের রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মনিরুল হক চৌধুরী, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ডা. রফিকুল ইসলাম, রেহানা আক্তার রানু, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
৪৪৬ পড়েছেন