Sharing is caring!
সিলেট এইজ : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী যাচ্ছেন কাল। জেলার ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে রাজশাহীজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। মাদ্রাসা মাঠের সাজসজ্জা ও মঞ্চ তৈরির কাজও শেষ। সর্বত্র শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন। যাতে তুলে ধরা হয়েছে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্রও। দীর্ঘ ৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে প্রস্তুত রাজশাহী। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহীর জনসভাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টানা এক মাস রাজশাহী নগরী ছাড়াও বিভাগের সব জেলা-উপজেলা, গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর আগমনী বার্তা পৌঁছানো হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের নেতারা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন জনসভা সফলের লক্ষ্যে। শুক্রবার মাদ্রাসা মাঠ পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান এবং তথ্যমন্ত্রী ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন যুগান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে সাদরে বরণ করতে প্রস্তুত রাজশাহী। এই জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত করার লক্ষ্যে রাজশাহীর প্রতিটি ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লায় সব নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীতে ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করবেন বলেও জানান তিনি। এরমধ্যে ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে এবং ৫টি চলমান রয়েছে। সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী কাল সকাল ১০টায় রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী অভিবাদন গ্রহণ ও প্যারেড পরিদর্শন করবেন। একই সময় তিনি প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী এএসপিদের মধ্যে পদক বিতরণ করবেন। পরে তিনি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন। দুপুরের পর প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে ভাষণ দেবেন। রাজশাহীর জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে-তথ্যমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি দেখতে শুক্রবার বিকালে মাদ্রাসা মাঠে যান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহীর জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। শুধু মাদ্রসা মাঠ নয়, আশপাশের এলাকাও লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। এ জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেবেন। পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচিতেও সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে থেকে দেখার জন্য জনগণ অপেক্ষায় আছে। মন্ত্রী আরও বলেন, গাড়ি পুরোনো হয়ে গেলে কয়েকদিন পরপর স্টার্ট দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। বিএনপির অবস্থা এখন পুরোনো গাড়ির মতো। বিরতি দিয়ে দিয়ে প্রোগ্রাম করে। দম না থাকায় এখন তারা নীরব পদযাত্রার কর্মসূচি দিয়েছে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও আয়েন উদ্দিন এমপি। বিএনপি আমাদের কাছে কোনো সাবজেক্ট নয়-নানক : সকালে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশ হয়রানি করছে বলে দুদিন আগে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু। তার এ বক্তব্যকে মিথ্যাচার উল্লেখ করে এ সময় নানক সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি আমাদের কাছে কোনো সাবজেক্ট নয়। টুকু মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় উন্নয়নের বার্তা শুনতে লাখ লাখ মানুষ আসবেন। উত্তরাঞ্চলের মানুষ অধীর আগ্রহে বসে আছেন। আমরা বিশ্বাস করি, বিএনপির লোকেরাও এই সভায় উপস্থিত হবেন। কারণ, যারা বিএনপি করেন তারা এই দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপের নাগরিক নন। এ সময় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিএনপি যে ১০ দফা দাবি দিয়েছে তা দেশের মানুষ পাত্তা দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন আবদুর রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য অসাংবিধানিক-অগণতান্ত্রিক দাবি সামনে নিয়ে আসে। এই দাবিকে এ দেশের মানুষ পাত্তা দিচ্ছে না, আমলে নিচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কথা বিএনপি বহু আগে থেকেই বলছে, এটা নতুন কথা নয়। বিএনপি একটা দেউলিয়া রাজনৈতিক দল, নেতৃত্বহীন দল।
৫৩৭ পড়েছেন