Sharing is caring!
স্টাফ রির্পোটার: সিলেটের একটি চিহ্নিত ভুমিদস্যু চক্র জাল দলিল সৃষ্টি করে নগরীর বাগবাড়িতে অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত সরকারের শাসন আমলে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে ভুমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বাগবাড়ি মৌজায় ১১৯৬,১১৯৭,১২৩০ ও ১২৩১ নাম্বার দাগের (ভিপি ৭৬/৭৭) ৬.৯৭ একর অর্পিত সম্পত্তি গ্রাম করার পায়তারা চালিয়ে আসছিলো। অথচ এই ভুমিতে সরকারি নিয়মমেনে ৫১ টি পরিবার রয়েছে লিজ গ্রহিদা হিসাবে। এই ৫১ টি পরিবার দীর্ঘদিন থেকে এই ভুমিতে বসবাস করার পাশাপাশি নিয়মিত খাজনাপাতি পরিষোধ করে আসছিলো।
কিন্ত বিগত কয়েক বছর আগে এই ভুমির উপর নজর পড়ে সিলেটের আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বাহিনীর। এই বাহিনী লিজ গ্রহীতা এই ৫১ টি পরিবারকে যেকোন ভাবে উচ্চেদ করে কয়েক কোটি টাকা দামের এই সম্পত্তি আত্মসাৎ করে নিতে কিছু জাল দলিলাদি সৃষ্টি করে। বিভিন্ন আকারে প্লট বানিয়ে বিক্রি করতে থাকে। এভাবে বেশ কয়েকটি প্লট নাদেল বাহিনী বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শফিউল আলম নাদেলের ক্ষমতাকে পূঁজি করে ভুমিখেকো চক্র জাল দলিল সৃজন করে জরিপ বিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অর্পিত এই সম্পত্তি বে-আইনী ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে তসদিক করে নেন।
ভুমিখেকো এই চক্রের অপতৎপরতার ফলে বেহাত হয়ে যাচ্ছে সরকারি এ সম্পত্তি। সম্প্রতি উক্ত অর্পিত সম্পত্তির বৈধ লীজ গ্রহীতারা সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ পত্রের সাথে, জরিপ বিভাগ কর্তৃক অর্পিত সম্পত্তির তসদিককৃত কাগজপত্র জমা দিয়ে দ্রুত প্রতিকার চার ভোক্তভোগীরা। স্থানীয় লিজ গ্রহীতারা জানান, ভুমি জরিপ বিভাগের সংশ্লিষ্ট রেভিনিউ অফিসার সরকারী অর্পিত এই সম্পত্তির প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি ফর্চা এটাস্টেট করেনেন। এসব ফর্সা দিয়ে কয়েকটি প্লটের দলিলও করে নেয় এই ভূমি গ্রাসকারী চক্র। এসব জমির দলিল হয় ২০০৬ ইং।
উল্লেখিত দাগের বিক্রিত প্লটগুলোর পর্চাসমূহ এটাস্টেট করা হয় ২০০৬ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর। এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লীজ গ্রহীতারা বিষয়টি জানতে পেরে ২০০৬ সালের ১৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসকসহ ঢাকায় ভুমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আজ পর্যন্ত জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। লিজ গ্রহিতারা আভযোগ করেন, ভুমি খেকো এই চক্রটি ভুমি ও জরিপ বিভাগের কর্মকর্তাসহ এডিসি রেভিনিউকে ম্যানজে করেই টাকার বিনিময়ে বাগবাড়ী মৌজার ভিপি ২৪/৭৬/৭৭ এর ভুমির জে.এল নং-৯০ এর একটি এবং সাবেক দাগ নাম্বার পরিবর্তন করে নতুন জেএল নং-৬৮ বানিয়ে সাবেক ১১৯৭ দাগের পরিবর্তে নতুন ১১২০৪ নং দাগের ৫ শতক ২৮ পয়েন্ট আশিক মিয়ার নামে এবং একই দাগের বিপরীতে ১১২০৩, ১১২০৬, ১১২০৭ নতুন দাগের ১৮ শতক ব্রিটেন প্রবাসী আরিজ খানের নামে। নতুন ১১২০৫ দাগের ১২ শতক বারিক মিয়া ও মাহবুবুল ইসলামের নামে নতুন ১১২০৯ দাগে ৬ শতক আসিক মিয়া, ইসলাম উদ্দিন, আলাউদ্দিনের নামে, নতুন ১১১৯৩, ১১১৯৭ দাগে ১৭ দশক ৯৬ পয়েন্ট নিজাম উদ্দিনের নামে, নতুন ১১১৯৮ দাগে ১১ শতক আমিন মিয়া, আজিজ মিয়া, ইউসুফ মিয়ার নামে সাবেক ১১৯৬ দাগের অনুকুলে নতুন ১১৮৭, ১১১৮৬ দাগে ৭। শতক তাজ উদ্দিন ও এম.এম টুনু মিয়ার নামে, সাবেক ১১৯৭ দাগের অনুকুলে নতুন ১১২০০ দাগে ১২ শতক ৪৪ পয়েন্ট সওকত আরা নাজনীন চৌধুরীর নামে এবং নতুন ১১১৩৯ অর্পিত দাগে সেলিনা বেগম নামে ১২ শতক ৬৮ পয়েন্ট ভুমি তসদিক করে পর্চা নিয়ে নেন। এখানে তিনি বড় অংকের টাকা নিয়ে এই ভুমিতে প্রায় ৩০/৩৫টি পর্চা এটাস্টেট করে ভুমি থেকো চক্রকে সরকারী সম্পত্তির মালিক বানিয়ে দিয়ে গেছেন। তাতে দেখা যায় ওই ভুমির দলিল হয়েছে ২০০৬ইং সনে আর তিনি এটাস্টেট করেছেন সবগুলো পর্চা ১৮/১০/০৫ ইং তারিখে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে। তৎকালীন সময়ে ভুমি অফিসের কর্মকর্তা জাফর আহমদকে ম্যানেজ করে এইসবঅনিয়ম দুর্নীতি করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ১৭/১০/০৬ ইং তারিখে মহাপরিচালক ভুমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর তেজগাঁও ঢাকায় লিজ গ্রহীতারা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও অদ্যাবদি এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। লিজ গ্রহীতারা সরকারী ভুমি রক্ষার্থে এবং ভুমি খেকো চক্র ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বর্তমান। অন্তবর্তীকালীন সরকার, জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট মহলের হস্থক্ষেপ ও সুদৃষ্টি কামনা করেন।
৬৮ পড়েছেন