• ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

দূর্নীতিতে অপ্রতিরুদ্ধ সিলেট পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মামুন : দুদকে দূর্নীতি প্রমানিত

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
দূর্নীতিতে অপ্রতিরুদ্ধ সিলেট পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মামুন : দুদকে দূর্নীতি প্রমানিত

Sharing is caring!

বিশেষ প্রতিবেদন : আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ পাওয়ার সম্পদের পাহাড় বেড়েই চলছে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসরে পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের। সিলেট থেকে বিভিন্ন অনিয়ম থাকলেও তাকে বদলীর পরিবর্তে ঢাকা অফিসে প্রমোশন দিয়ে বদলী করা হয় গত সরকারের আমলে। বিগত সরকারের মদদ পুষ্ট মামুন সরকার বদলের পরও দুহাতে কামাচ্ছেন কাড়ি কাড়ি কাঁচা টাকা। তার কাছে সিলেট পাসপোর্ট অফিস কাঁচা টাকার খনি। নিজস্ব সিন্ডিকেট গড়ে স্থানীয় কিছু সাংবাদিককে ম্যানেজ করে নিজের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। সিলেটের কিছু সাংবাদিককে দিয়ে যাচ্ছেন অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা তাই সকলেই তার দূর্নীতিকে প্রমোট করে যাচ্ছেন। বিনিময়ে প্রতিদিন কয়েকটি ফাইল ভাগিয়ে নিচ্ছেন।
সরকার বদল হলেও সিলেটে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস এখনও ‘মার্কার সিন্ডিকেট’র নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। পুলিশী ঝামেলা আর অফিসের কর্মকর্তাদের সহজে বুঝানোর জন্য নির্ধারিত মার্কার ব্যবহার করছে দালাল, কর্মকর্তা, কর্মচারী আর বিভিন্ন ট্রাভেলস এজেন্সির সম্মিলিত সিন্ডিকেট। এ রকম একটি দালাল চক্রের তালিকা এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
ভোক্তভোগীরা জানান, নির্ধারিত দালাল আর চিহিৃত মার্কার ছাড়া পাসপোর্ট করাই যাচ্ছেনা সিলেট আঞ্চলিক অফিসে। লাইনে দাড়িয়ে আবেদন করলেও কোনো না কোনো অযুহাতে আবেদনের ফাইলটি আটকিয়ে ১ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। দুটি সিন্ডিকেট রয়েছে অফিসের ভিতরে, অফিসের আনসার প্রহরী মোস্তফা কামাল ও পরিচালক মামুনের পিএ রুবেল আহমদ রাহাত, অফিস সহকারী জাকির হোসেন, ডিএডি শাহাদাৎ হোসেন। সকলে মিলে গড়ে তুলেছেন একটি নিজস্ব সিন্ডিকেট। আর ট্রাভেলস এজেন্সি সহ কতিপয় সাংবাদিক নিয়ে গড়ে তুলেছেন আরেকটি সিন্ডিকেট। কারণ সিলেট পাসপোর্ট অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজই হচ্ছেনা। আবেদন জমা দিতে গিয়েও দালাল ধরতে হয়, লাইনে দাঁড়ালেও দ্রুত ভেতরে যেতে আনসার সদস্যদের ৫০ থেকে ২ শ টাকা দিতে হয়, ভেতরে আবেদনে ‘ভুল’ ধরে ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা করে নেওয়া হয়, ভেতরে টাকা গ্রহণ করে দালাল চক্র।
দুদক আর সেনা অভিযানের আতংকে ‘দালাল সিন্ডিকেট’ রক্ষায় গড়ে তোলা হয়েছে অফিসিয়াল ‘মার্কার সিন্ডিকেট। নতুন করে গড়ে উঠা এ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করছেন অফিসের পরিচালক ও সহকারী পরিচালক নিজেরাই। তাদের নিযুক্ত মার্কারদের ‘মার্ক’ ছাড়া গৃহীত হয়না পাসপোর্টের আবেদন। আর দু’একটা গৃহীত হলেও ফাইলবন্দী হয়ে থাকে দীর্ঘদিন। মাঝে মধ্যে উধাও হয়ে যায় আবেদনকারীর ফাইলটি। এখন ডিজিটাল হয়েছে ঘুষ গ্রহণের প্রক্রিয়া, হয়েছে মার্কার পরিবর্তন, পাসপোর্ট প্রতি নির্ধারিত ঘুষের টাকা পরিশোধ করতে হয় প্রতিদিন বিকালে। নগদ কিংবা বিকাশে গ্রহণ করা হয় সারাদিনের ঘুষের টাকা। পাসপোর্ট অফিসে লাগামহীন ভাবে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। সূত্রমতে দালালরা আবেদন ফাইল প্রতি ১২শত টাকা নিয়ে অফিসের নিযুক্ত কর্মচারীদের মার্কার গ্রহন করে লাইনে জমা করেন। প্রতিদিন অফিসে মার্কারদের মার্ক করা ফাইলগুলো পৃথক করে তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে টাকা গ্রহন করা হয়। যাদের ফাইলে ‘মার্ক’ নেই সেগুলোর অনেকটা বিভিন্ন অজুহাতে ফেরত দেয়া হয়। এডির নির্দেশে মার্কার ছাড়া ফাইল গুলি পৃথক করে সপ্তাহ থেকে দশদিন পর্যন্ত ফাইল বন্ধি করে রাখার পর পুলিশ অফিসে প্রেরন করা হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশন যাওয়ার পর আবার সপ্তাহ-দশদিন বন্দী রেখে পরে ঢাকায় প্রেরন করা হয়ে। যার ফলে সরকারী ফ্রি পরিশোধ করেও নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট মিলেছেনা আবেদনকারীদের। বারবার ধর্না দিতে হয় অফিসের কর্তাব্যক্তি ও কর্মচারীদের কাছে। সরকারী নিধারিত ফ্রি থেকে দ্বিগুণ টাকা গুনতে হয় আবেদনকারীদের। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও হয়রানী ও সাংবাদিকদের নামে হুমকি দিয়ে থাকেন কর্মকতারা। সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দৈনিক ৪ থেকে সাড়ে ৫ শ’ আবেদন ফাইল গ্রহন করা হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে ২০ থেকে ৩০টি আবেদন ‘মার্কার’ ছাড়া হয় এবং বাকি সবই ‘চ্যানেল মার্কার’ আবেদনই হয়ে থাকে। এভাবে চলছে সিলেট পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম।
পরিচালকের যত সম্পদ-দুদকে মামলা: ঘুষ, দুর্নীতিসহ বিভিন্নভাবে সাড়ে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে বর্তমান সিলেটের পরিচালক ও ঢাকা পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। আব্দুল্লা আল মামুন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নলিন বাজার এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত বাদে-উজ-জামান। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত অবস্থায়ই ২০২২ সালেই তার ৯টি ফ্ল্যাট ও দুটি প্লটের মালিকানা পায় দুদুক। তখন তিনি ঢাকা অফিসে কর্মরত ছিলেন। সিলেট থেকে ঢাকায় বদলী হওয়ার পর বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিকানার প্রমাণ পাওয়ায় ২০২২ সালের ২১ জুন মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্ত কাজ শেষ করতে পারিনি দুদক। এ সুযোগে সিলেটে বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন আবদুল্লাহ আল মামুন। ঢাকা থেকে সিলেট ২য় বারের মতো বদলী হয়ে এসেছেন পরিচালক মামুন। অভিযোগ রয়েছে, দুদকের আসামি হওয়ার পর ভয় পাওয়ার পরিবর্তে আরও বেপরোয়া হয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশ না করে পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তার বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি, অনিয়ম ও শৃঙ্খলাভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। যা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। বিগত সরকারের শাসন আমলের মতো এখনো তিনি দুহাতে কামাই করছেন। সিলেট পাসর্পোট অফিসের পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের মালিকানাধীন ১১ ফ্ল্যাট ও প্লটের মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে হলি হাসিনা নামের ৭ তলা ভবনে গ্যারেজসহ ১১০০ বগফুটের ফ্ল্যাট, নিউ এলিফ্যান্ট রোডের ২২৩ হোল্ডিংয়ের ৭ তলা ভবনে গ্যারেজসহ ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডির নর্থ ভুতের গলির ৫০ নম্বর হোল্ডিংয়ে গ্যারেজসহ ৮৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, হাজারিবাগ চরকঘাটার ৭নং রোডের সিকদার রিয়েল এস্টেটের ১৪০০ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর রোডের এফ ব্লকে ৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরের চাঁদ হাউজিংয়ের বি ব্লকে ৭৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে ৪৩/৩ এ ১১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডির ১১/৩ নম্বর রোডের ৭৭ নম্বরে নিজ ও স্ত্রীর যৌথ নামে ২২৫১ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আউট প্ল্যানের ৮ নম্বর রোডে ১০৭ নম্বর প্লটের সিকদার রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের অর্ধ কাঠা জমি এবং রাজধানীর কাফরুলের ইব্রাহিমপুর মৌজার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ০.১৮৩ অযুতাংশ নাল জমি। এর মধ্যে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ক্রয় করা কিছু জমিসহ ছয়টি ফ্ল্যাট ক্রয়বাবদ ২ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও নগদ ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে ২০২০-২০২১ করবর্ষে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৯ ধারায় বৈধ করেছেন।
মামুনের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির বিষয়ে এনবিআর ও দুদক সূত্রে যা জানা যায়, পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের পরিচালক মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যেসব স্থাবর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন তার মধ্যে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৪ শতাংশ কৃষি জমি ও ৫০ শতাংশ কৃষি ও বসতভিটা ছাড়া সব সম্পত্তির সরাসরি ক্রয়সূত্রে মালিক হয়েছেন। ক্রয় করা স্থাবর সম্পদের মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আউট প্ল্যানের ৮ নম্বর রোডে ১০৭ নম্বর প্লটের সিকদার রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের অর্ধ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন ২০০৫ সালে। মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে হলি হাসিনা নামের ৭ তলা ভবনে গ্যারেজসহ ১১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেন ২০১২ সালে, নিউ এলিফ্যান্ট রোডের ২২৩ নম্বর হোল্ডিংয়ের ৭ তলা ভবনে গ্যারেজসহ ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের মালিক হন ২০০৬ সালে এবং ধানমন্ডির নর্থ ভূতের গলির ৫০ নম্বর হোল্ডিংয়ে গ্যারেজসহ ৮৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেন ২০০৯ সালে।এ ছাড়া ২০০৬-০৭ সালে মালিক হন হাজারিবাগ চরকঘাটার ৭ নম্বর রোডের সিকদার রিয়েল এস্টেটের ১৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। একই রিয়েল এস্টেটের ১৪০০ বর্গফুটের আরও একটি ফ্ল্যাট ২০০৯ সালে ক্রয় করেন। আর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর রোডের এফ ব্লকে ৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটি কেনেন ২০১০ সালে। মোহাম্মদপুরের চাঁদ হাউজিংয়ের বি ব্লকে ৭৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ২০১০ সালে এবং ২০১১ সালে মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে ৪৩/৩ এ ১১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের মালিক হন ক্রয় সূত্রে। অন্যদিকে ধানমন্ডির ১১/৩ নং রোডের ৭৭ নম্বরে নিজ ও স্ত্রীর যৌথ নামে ২২৫১ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটি তারা কেনেন ২০১৮ সালে। এছাড়া রাজধানীর কাফরুলের ইব্রাহিমপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ০.১৮৩ অযুতাংশ নাল জমি নিজ নামে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন ২০০৯ সালে। আর ওই সকল সম্পত্তি তিনি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের আয়কর নথিতে ১৯ (এএএএএ) ধারায় ঘোষণা দিয়ে বৈধ করার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে মামুনের অস্থাবর সম্পত্তির বর্ণনায় রয়েছে সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের (জিপিএফ) সুদসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকা, ইসলামী ব্যাংকের বাংলাদেশের আগারগাঁও শাখার গচ্ছিত তিন হিসাবে ৭০ লাখ, ৭৫ লাখ ৩৬ হাজার ও ৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা এবং আলিকো ইন্স্যুরেন্স বাবদ ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকাসহ ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
দুদকে মামলার এজাহার সূত্রে আরো জানা যায়: ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর আব্দুল্লাহ আল মামুন দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দাখিল করা সম্পদের হিসাবে ২০০২-২০০৩ থেকে ২০২১-২০২২ করবর্ষ পর্যন্ত হিসাবের বর্ণনা দেওয়া রয়েছে। যেখানে তিনি ২ কোটি ৯২ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পত্তির বর্ণনা দিয়েছেন। আর অস্থাবর সম্পদ হলো ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫০ টাকা। সবমিলিয়ে ১৮ বছরে তিনি মোট ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৪১ হাজার ২৫৩ টাকার সম্পদের হিসাব জমা দেন। ওই সময়ে কর পরিশোধ ও পারিবারিক খরচ বাবদ ৫৪ লাখ ৭২ হাজার ৮৯৫ টাকা বাদ দিয়ে তার নিট আয় দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৩৬ হাজার ১২৪ টাকা। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ক্রয় করা কিছু জমিসহ ৬টি ফ্ল্যাট ক্রয় বাবদ ২ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং নগদ ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে ২০২০-২০২১ করবর্ষে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৯ (এএএএএ) ধারা অনুযায়ী বৈধ করেছেন। সেখানে তিনি ফ্ল্যাটে বর্গমিটার অনুযায়ী কর পরিশোধ করেছেন। সবমিলিয়ে ৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বৈধ করেছেন বলে জানা গেছে। মামলার বিবরণ অনুসারে মামুনের মোট অর্জিত ৫ কোটি ৯২ লাখ ১৪ হাজার ১৪৮ টাকার সম্পদের বিপরীতে তার অর্জিত আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৩০ লাখ ৫৯ হাজার ১৯ টাকা। সেক্ষেত্রে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার ১২৯ টাকা। অর্জিত অবৈধ সম্পদের মধ্যে ৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে দুদক প্রমাণ পেয়েছে। যে কারণে সম্পদের তথ্য গোপনসহ আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার ১২৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। সংস্থাটির তৎকালীন উপপরিচালক মো.ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় মামলা দায়ের করেছিলেন। এদিকে ২য় বারের মতো আব্দুল্লাহ আল মামুন সিলেট পাসপোর্ট অফিসে বদলী হয়ে এসেছেন। নতুন করে সিলেট যোগদানের পর থেকে তিনি নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আবারও দূর্নীতির আতুড় ঘর বানিয়ে নিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসকে। (চলমান)
দালালদের তালিকাসহ নিয়ে আসছি বিস্তারিত।
১৫০ পড়েছেন