• ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ সুরমায় পুলিশ এ্যাসল্টের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দফায়-দফায় বসছে বৈঠক

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ৮, ২০২৫
দক্ষিণ সুরমায় পুলিশ এ্যাসল্টের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দফায়-দফায় বসছে বৈঠক

সিলেটের শীর্ষ জুয়াড়ী নজরুল ও আল আমিন

Sharing is caring!

বিশেষ প্রতিনিধি: সিলেট দক্ষিন সুরমার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের যমুনা মার্কেটের পিছনের গলি, রেলষ্টেশন ও চাঁদনীঘাট মাছ বাজারে পৃথক তিনটি জুয়ার বোর্ডের মালিক মিতালি বাস মালিক সমিতির সদস্য হবিগঞ্জের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম, শ্রিরাপুর এলাকার রাজন মোল্লা ও আল আমিন। তাদের শেল্টারদাতা মিতালী বাস শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়া । শ্রমিকদের ক্ষমতাকে পুঁজি করে নজরুলের নেতৃত্বে তিনটি বিশাল জুয়ার আসর বসে  প্রতিদিন রাতে উল্লেখিত তিনটি স্পটে। যা থেকে শ্রমিকদের নামে একটি বড় অংকের টাকা নেন শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়া। জুয়ার বোর্ড গুলো চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে । পুলিশের কোন বাহিনীই নজরুলের এ সকল জুয়ার বোর্ড বন্ধ করতে পারেননি । সাবেক কমিশনারের নির্দেশেও বন্ধ হয়নি নজরুলের জুয়ার বোর্ডগুলো । ক্ষমতার উৎস্য নজরুল মিতালী বাস মালিক সমিতির সদস্য শেল্টারদাতা সমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া । এবার দক্ষিণ জোনের ডিসি নির্দেশে গত ৫ জানুয়ারী রাত ২টার দিকে যৌথ অভিযান চালান দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি ও টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ির আইসির নেতৃত্বে প্রায় দুই ডজন পুলিশ সদস্য। টার্মিনালের সেই জুয়ার বোর্ডে গিয়ে হামলার শিকার হন দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মিজানুর রহমান, ট্রার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ির আইসি লোকমান হোসেনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ।
হামলার শিকার হওয়ার পর রাতেই গোপনে ফাঁড়ির আহত আইসিকে হাসপাতলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় । প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ওসিও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন, যদিও এখন ওসি হামলার বিষয়টি আড়াল করা চেষ্টা করছেন। এ সময় নজরুল, রাজন মোল্লাসহ জুয়াড়িরা পুলিশের একটি গাড়িও ভাংচুর করে। পরে প্রাণ রক্ষায় ওসিকে ফাঁড়ির অন্য একটি গাড়িতে উঠিয়ে থানায় নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদেরকে হামলা করতে তাড়া করে পুলিশ ফাঁড়ির সামনের রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে যায় জুয়াড়িরা । কিন্তু ৫ জানুয়ারী ঘটনাটি ঘটলেও এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা করেননি দক্ষিণ সুরমা থানার কোন পুলিশ সদস্য। ঘটনার পর থেকে শেল্টারদাতা সেলিমসহ বেশ কিছু শ্রমিক নেতা ফাঁড়িতে গিয়ে এবং থানায় গিয়ে বিষয়টি গোপনের মিমাংশার চেষ্টার করছেন । এনিয়ে আজ পর্যন্ত দফায়-দফায় বসছে বৈঠক। সূত্র জানিয়েছে, ওসি নাকি সেদিনের কোন ঘটনাটি কমিশনার পর্যন্ত জানান নি। এ ঘটনার পিছনের রহস্যটা কি ? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ রকম আরো প্রায় অর্ধশত জুয়ার বোর্ড সিলেট এসএমপি এলাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে । পুলিশ কোন ভাবেই বন্ধ করতে পারছেনা এসব জুয়ার আসর । এক সময় সিলেট মহানগর এলাকার সকল জুয়ার বোর্ড বন্ধ হয়ে যায় এসএমপির ডিবি পুলিশের সাড়াসি অভিযানের ফলে । কিন্তু নজরুলের এই জুয়ার বোর্ডটি বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছিলেন সাবেক ডিবির ডিসি ও এডিসি । এই সময়ও কোন রকম মামলা করেন নি ডিবি পুলিশের সদস্যরা। অবশ্য এসময় অভিযোগ ছিলো, ডিবির পুলিশ সিআরটির সিভিল সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রথমে জুয়ার বোর্ডে লুটপাট করে নিতেন, পরে জুয়াড়ীদের পকেটে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধরের ভয় দেখিয়ে ভালো বাণিজ্য করতে নেমেছিলো । অভিযোগ ছিলো ডিবি পুলিশ কোন জুয়ার বোর্ড থেকে ১৫ জনকে আটক করলে ১০ জনকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিতো । বাকি ৫ জনকে আটক দেখিয়ে কোর্টে চালান করতো । জুয়ার আইন দূর্বল থাকায় সহজে জরিমানা দিয়ে পরদিনই কোর্ট থেকে জুয়াড়ীরা ছাড়া পেয়ে যেতো, ফলে জুয়াড়ীদের লাগাম টেনে ধরতে পারেনি পুলিশ। বাস টার্মিনালের সেই জুয়া বোর্ডে গিয়ে এবার হামলার শিকার থানার ওসি ও ফাড়ির আইসি । কিন্তু রহস্যজনক কারনে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয়নি দক্ষিণ সুরমা থানায়। যদিও ঘটনার পর থেকে নজরুলের জুয়ার বোর্ডগুলো শুন্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

৩৬ পড়েছেন