Sylhetnews,banglanews,allnewspaper,
Sharing is caring!
সম্পাদকীয়: দেশের পৌরসভাগুলোতে নাগরিক সেবার সংকট প্রবল। নগরবাসী পৌর কর পরিশোধ করলেও অনেক সুযোগ-সুবিধাই তাঁরা পান না। এর মধ্যে অন্যতম সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়া। এমনও দেখা গেছে, দুই যুগ পার হয়ে গেলেও কোনো পৌরসভায় নিরাপদ পানি সরবরাহব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। সেদিক দিয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে বলা যায় হবিগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এটি দেশের অন্যতম পুরোনো পৌরসভা। ফলে সেখানে আগেই পানি সরবরাহব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তবে পৌর এলাকার পরিধি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা অনুসারে আরেকটি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ-সংযোগের অভাবে প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে মুখোমুখি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত ৩০ জুন পৌরসভার দ্বিতীয় পানি সরবরাহ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হয়। এর পেছনে খরচ হয় ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটিতে ঘণ্টায় ৩৫০ ঘনফুট পানি পরিশোধনের ক্ষমতা রয়েছে। আগের প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে শহরের ৫০ ভাগ এলাকায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন প্রকল্পটি চালু হলে আরও ১০ থেকে ১৫ ভাগ এলাকা এর আওতায় আসবে। কিন্তু দুটি সংস্থার দ্বিমতের কারণে ছয় মাস ধরে বিদ্যুৎ-সংযোগ স্থাপিত না হওয়ায় নতুন প্রকল্পটির মাধ্যমে শহরে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিপিডিবি তার নীতিমালা অনুযায়ী পানি সরবরাহ প্রকল্পটিতে প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে চায়। অন্যদিকে পৌরসভা চায় পোস্টপেইড পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে। পৌর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিপিডিবির গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে বিলম্ব হচ্ছে। যে কারণে এ প্রকল্প চালু করতে পারছে না। এতে নাগরিকেরা সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিপিডিবির হবিগঞ্জ কার্যালয় জানাচ্ছে, বিপিডিবির নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যুৎ-সংযোগ দিতে প্রস্তুত আছে। মূলত প্রিপেইড মিটার বিদ্যুৎ–সংযোগে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখার কোনো সুযোগ নেই। মাসের বিল মাসেই পরিশোধ করতে হবে। আর পোস্টপেইড পদ্ধতির সংযোগে চাইলে বিল বকেয়া রাখা যায়। ফলে এই পদ্ধতির সুযোগ নিতে চায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সুধীজনেরা বলছেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এমন অনড় অবস্থানের কারণেই মতবিরোধের অবসান হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই নীতিমালা অমান্য করে বিপিডিবির বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেটি বুঝতে হবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে। এখন মতবিরোধ নিরসনে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। এতে উভয়েরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মনোযোগ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমরা। দ্রæত পানি সরবরাহ কেন্দ্রটি চালু করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হোক।
৪৭৪ পড়েছেন